যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মাত্র দুই মিনিটের মাথায় তা লঙ্ঘন করে আবার যুদ্ধ শুরু হয়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ায়। তবে কোন পক্ষ আগে চুক্তি ভেঙেছে তা নিয়েও চলছে ধোঁয়াশা।
আর্মেনিয়ার দাবি, এটি কার্যকর হওয়ার মাত্র দু’মিনিটের মাথায় আর্টিলারি শেল ও রকেট ছুড়ে তা লঙ্ঘন করেছে আজারবাইজান। বিরোধীয় নাগোরনো-কারাবাখে প্রায় সাত শতাধিক আর্মেনীয় যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত আজেরি কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাত থেকে নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর সমঝোতা হয়।
এর আগে শনিবার সকালে আর্মেনিয়ার ছোড়া গোলার আঘাতে আজারবাইজানের অন্তত ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। পরে উভয়পক্ষ চুক্তিতে সম্মত হলেও সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। বিবিসি।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুশান স্টেপানিয়ান ফেসবুকে এক ভিডিও পোস্টে বিধ্বস্ত নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলটি দেখিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘রাতে, আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আজারবাইজান সামরিক বাহিনী স্তেপানাকার্তের বেসামরিক এলাকায় মিসাইল হামলা চালিয়েছে।’
দুই দেশের বিতর্কিত এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের এ যুদ্ধে প্রাণ হারাচ্ছে অসহায় বেসামরিক নাগরিকরা। আবাসিক এলাকায় হামলা করার জন্য দুই দেশই একে অন্যকে দায়ী করছে।
আজারবাইজান বলছে, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক ভেতরের শহর গানজায় আর্মেনিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
এদিকে আর্মেনিয়া অভিযোগ করে বলেছে, স্তেপানাকার্ত এলাকার বাড়িঘরে হামলা করেছে আজারবাইজান। এটি নাগারনো-কারাবাখে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আজারবাইজান অংশের রাজধানী এবং যেখানে মূলত আর্মেনিয়ান জাতিগোষ্ঠীর বাস।
২৭ সেপ্টেম্বর থেকে বিরোধীয় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান নতুন করে যুদ্ধে জড়ায়।
পরবর্তীতে ১০ অক্টোবর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে ম্যারাথন আলোচনা হয়।
এতে উভয় পক্ষ মানবিক কারণে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এ যুদ্ধবিরতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবন্দিসহ অন্যান্য বন্দি বিনিময় ও মৃতদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়।
১১ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতির কয়েক মিনিটের মধ্যেই আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান পরস্পরকে সাময়িক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘেনের জন্য অভিযুক্ত করে।
কারাবাখ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। তবে ওই অঞ্চলটি জাতিগত আর্মেনীয়রা ১৯৯০’র দশক থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
ওই দশকেই আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।