মো: রেজাউল করিম মৃধা: করোনাভাইরস মহামারি কবলে সারা বিশ্ব। ব্রিটেনে ঘরে বন্ধি।ব্রিটেনে দ্বিতীয় জাতীয় লক ডাউন চললেও প্রাইমারী স্কুল, সেকেন্ডারি স্কুল, কলেজ , বিশ্বিবিদ্যালয় সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। কিন্তু কোন শিক্ষাপ্রতিস্ঠান্ যদি কেহ করোনায় আক্রান্ত হন তবে পুরো ক্লাস কিম্বা পুরা শিক্ষা প্রতিস্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়।কিন্তু শিক্ষা কার্যকর্ম অব্যহত থাকে অন লাইনে ।
বৃটিশ এডুকেশন সেক্রটারী রিটায়ার্ড অনারেবল গ্যাভিন উইলিয়ামসন (সিবিই) বলেন,”দি স্কুলিং কমিউনিটি ইউকে অন লাইনে পারদর্শী হচ্ছে। সেই সাথে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যাবস্থা অন লাইনের আওতায় আনা হচ্ছে।শতকরা ১০০ পারসেন্ট অন লাইন আন্ডার গ্রেজুয়েট , ডিপলোমা কোর্স সহ আইটি কোর্স সহ সকল কোর্স গুলি অন লাইনের আওতায় আনা হয়েছে।সকল শিক্ষা ব্যাবস্থা অন লাইনের আওতায় আনা হবে যাতে করোনায় আক্রান্ত হলেও বাসায় থেকে অন লাইনে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে,”।তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে অভিভাবকদের ও অন লাইনে পারদর্শী হতে হবে,”।
অনেক অভিবাবক বা বাবা মা অন লাইন সম্পর্কে তেমন কোন ধারনা বা জ্ঞান না থাকার কারনে সন্তানরা কিভাবে অন লাইনে শিক্ষা গ্রহন করছে তার সঠিক কিছুই জানতে পারছেন না।
এর ফলে যে সব সমস্যা গুলি হচ্ছে।
১/সন্তানরা বুলিং এর স্বীকার হচ্ছে। হোম ওয়ার্ক ছাড়া স্কুলে যেয়ে অপমানিত হচ্ছে।শিক্ষা থেকে বন্চিত হচ্ছে।
২/ সন্তান লেখাপড়া না করে অন লাইন গেইম্স খেলছে।
খেলার মাধ্যমে নতুন নতুন বন্ধু পেয়ে যাচ্ছে। এসব বন্ধুরা শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া থেকে অন্য দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
৩/ অন লাইনে এমন অনেক আকর্শনীয় গেইম্স আছে যা খেলতে খেলতে অনেক স্টুডেন্ট আত্বহত্যা করেছে।
৪/ অন্য ওয়েব সাইডে চলে যাচ্ছে। যেখানে এই বয়সের স্টুডেন্টদের যাওয়া মোটেই উচিত নয়।
৫/ সন্তানরা কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনে লেখা পড়া বদলে
চ্যাটিং এ ব্যাস্ত থাকেন।মনোযোগ চলে যায় ভিন্ন দিকে।
৬/ বর্তমানে স্কুলে সরাসরি পেরেন্টস মিটিং করতে না পারায় অন লাইনে জুম বা স্ট্রিমিয়ার্ডে মিটিং পরিচালনা করা হয়ে থাকে সেখানেও পেরেন্টস রা অংশ গ্রহন করতে পারেন না। যার ফলে সন্তানদের লেখাপড়ার সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না।
৭/ স্কুল থেকে সব সময় অন লাইনে হোম ওয়ার্ক দিয়ে থাকে। সেই সব হোম ওয়ার্ক করতে পারছেনা স্টুডেন্টরা।
৮/ স্কুল থেকে প্রতি নিয়তোই ,ফোনে, ইমেইলে, হুয়াট্সআপে, কিম্বা অন লাইনে যোগাযোগ করছেন স্কুলের শিক্ষকরা , কিন্তু বাবা মা অন লাইন সম্পর্ক ভালো জ্ঞান বা দক্ষতা না থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর দিতে পারছেন না।
৯/ স্টুডেন্টদের হোম ওয়ার্কের ক্ষেত্রে অন লাইনের উপর নির্ভরশীল কিন্তু বাবা মা ভালো ভাবে অন লাইন না জানার কারনে স্টুডেন্টদের অনেক সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে।
১০/ বি বি সি বাইড সাইজ এবং ওক একাডেমী সব অনেক সরকারী ওয়েব সাইড সরকার মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে করেছেন। তবে স্টুডেন্টদের শিক্ষার জন্য অবশ্যই ফ্রি কিন্তু অনেক অভিবাবক না জানার কারনে সেই সব ওয়েব সাইড ব্যাবহার করতে পারছেন না।
১১/ যাদের অর্থনৈতিক সমস্যার কারনে কম্পিউটার , লেপটপ , আইপ্যাড বা স্মার্ট ফোন কিন্তে পারছেন না স্কুলকে জানালে তাদের কে স্কুল থেকে সহযোগিতা করা হয়।ব্রিটিশ সরকার যে কোন মূল্যে শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে চান।
১২/ সময়ের বাস্তবতায় ও টেকনোলজি বেইজ সুবিধা গ্রহনে ব্রিটেনের স্কুল গুলিতে অন লাইন রিসোর্স নির্ভরতা বাড়ছে।
১৩/ কভিড-১৯ বা করোনাভাইরসের কারনে স্কুলে যান বা না যান ক্লাস খোলা অব্যহত থাকবে। বাসায় আইসোলেশনে থাকলেও নিয়মিত অন লাইনে ক্লাস হবে।
১৪/ যদি বাবা মা বা অভিবাবকরা অনেক কিছু না বুঝেন তবে স্কুল বা শিক্ষা প্রতিস্ঠানের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। শিক্ষক বা কর্তিক পক্ষে আপনাকে সহযোগিতা করবেন। যদি সহযোগিতা না করেন তবে আপনি স্থানীয় কাউন্সিল বা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে অবশ্যই সহযোগিতা পাবেন।
১৫/ পারি না, জানিনা, এটা বলে পার পাওয়ার রাস্তা নেই বললেই চলে। অন লাইন শিক্ষা করার অনেক সুযোগ সুবিধা আছে। বিভিন্ন প্রতিস্ঠান আছে সেখানে গিয়ে শিখতে পারেন। আবার সরকারি বা কাউন্সিলের কিছু কিছু প্রতিস্ঠান আছে সেখানেও বিনা পায়সায় শিখতে পারেন।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত তাই ব্রিটিশ সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে।যেকোন মূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে চাচ্ছেন।সকল কিছুর উর্ধে এখন শিক্ষা। শিক্ষা প্রতিস্ঠান বন্ধ হলেও অন লাইন শিক্ষা ব্যাবস্থা চালু থাকবে।
করোনাভাইরস মহামারি কালেও লক ডাউনের মধ্যেও শিক্ষা প্রতিস্ঠান খোলা রেখেছেন। স্কুলে বা শিক্ষা প্রতিস্ঠান বন্ধ হলে ও অন লাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হবে।অন লাইল ক্লাস এখন সব চেয়ে গুরত্বপূর্ন। কিন্তু বাবা মা একাডেমিক শিক্ষিত হলেও অনেক বাবা মা অন লাইনে পারদর্শী নয়। এখন সন্তানদের শিক্ষার জন্য কিম্বা নিজের কাজের জন্য কম্পিউটার বা অন লাইন শিক্ষা গ্রহন করা খুবই জরুরী হয়ে পরেছে।
এখন কাউন্সিল টাক্স পে, ও অন্যান্য কাজ, ব্যাংক, শপিং, ডেলিভারী অর্ডার এমন কি উবার বা ট্যাক্সি ও অন লাইনে বুক করতে হয়। যে কোন কাজই এখন অন লাইনে হচ্ছে।অনেকটা অন লাইন নির্ভরশীল পৃথিবী হয়ে যাচ্ছে।আপনি আগের যত উচ্চ শিক্ষিতই হন বর্তমানের সাথে তাল মিলিয়ে অন লাইন বা ডিজিটাল লেখাপড়া করতে হবে।
সন্তানদের লেখাপড়া এবং নিজেকে সময়ের সাথে তালমিলিয়ে চলতে অন লাইন কোর্স বা অন লাইন শিক্ষা অতি প্রয়োজন।