চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে আড়াই লাখেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, করোনায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। মারা গেছেন আড়াই লাখেরও বেশি। গত কয়েক সপ্তাহে ভাইরাসটির সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর এ রেকর্ড হয়েছে দেশটিতে।
করোনাভাইরাসের আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা গণনাকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডমিটার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৫৪ জন মারা গেছে ভাইরাসটির কারণে। আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৭ জন মানুষ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যু সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার ১০০। আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১৫ লাখেরও বেশি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বলছে, দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু অনেক বেশি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ওঠার পর গত সপ্তাহ থেকে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই বেড়েছে। ফের করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এ নির্মম পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।
গতকাল বুধবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসক ড. অ্যান্টনি ফাইচি বলেছেন, ‘শুরু থেকেই আমরা একটি ভুল পথে চলে এসেছি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেছে।’
সাক্ষাৎকারে ফাউচি করোনায় মৃত্যুহার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে এটা খুবই বাজে পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন, পিছিয়ে পড়তে হতে পারে। ভাইরাসটি মানুষের মাধ্যমে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে। এ থেকে বোঝা যায় আমরা কতটা কঠিন পরিস্থিতিতে আছি।’
এর আগে জনগণের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতে ফাউচি মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব ও ভিড় এড়িয়ে চলা নিশ্চিতে ফের লকডাউন করার আহ্বান করেছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা খুব সহজ শোনায়, এবং আমরা জানি যে আমরা তা করতে পারি। কিন্তু লোকজনকে তা মানতে হবে।’ দেশের মানুষকে আরও কিছুটা সময় নির্দেশনা মানার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এ শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসক।
গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় ২ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল, ফাউচি তখন বলেছিলেন এটি ২ লাখ আমেরিকানের প্রাণ নেবে। সংক্রমিত হবেন আরও লাখ লাখ জনগণ।
করোনার সংক্রমণ বাড়ায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে দেশটির নিউইয়র্ক শহরের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে করোনা পরীক্ষা করে এখন পর্যন্ত শতকরা তিনভাগ পজিটিভ কেস পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ভাইরাসটি প্রায় ৩ লাখ শিশুর মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে।