মো: রেজাউল করিম মৃধা: ২০২০ সালের শেষ প্রান্তে এসে একদিকে করোনাভাইরস মহামারির তান্ডব অন্যদিকে ব্রেক্সিট। দুটি মিলিয়ে ভীষণ খারাপ অবস্থার মধ্য অতিবাহিত হচ্ছে ব্রিটেন। করোনাভাইরস মহামারির প্রকোট বাড়াতে পৃথিবীর প্রায় সব দেশের ফ্লাইট এক এক করে বন্ধ হচ্ছে। সেই সাথে ইউরোপের সাথে স্থল পথে, নৌপথে সকল যোগাযোগ ৪৮ ঘন্টার জন্য স্থগিত হওয়াতে ইউরোপের বিশেষ করে ফ্রান্স থেকে সড়ক পথে কোন লরি ব্রিটেনে না আসায় জিনিস পত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে।
শুরু হয়েছে পেনিক বায়িং যার এক বস্তা চাউলের দরকার সে নিচ্ছে ৪/৫ বস্তা সেই অনুসারে অন্যান্য জিনিস পত্রও প্রয়োজনের তুলনায় বেশী বেশী করে স্টক করছেন এ স্টকের কারনে শপিং মল, সুপার মার্কেট, সুপার স্টোর, এবং অন্যান্য গ্রোসারী গুলিতেও ইচ্ছেমত দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর ক্রেতাদের উপচেপরা ভীর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে শপ গুলি।
এদিকে করোনাভাইরসের নতুন আক্রমনের ভয়ে যে সব দেশ গ্রেট ব্রিটেনের সাথে ফ্লাইট বন্ধ ঘোষনা করেছে তার মধ্যে ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্লাইট স্থগিত করেছে আঙ্কারা। এদিন সৌদি আরবও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়।
সোমবার গ্রেট ব্রিটেন থেকে সবধরনের ফ্লাইট স্থগিত করেছে রাশিয়া। দেশটির ইমারজেন্সি টাস্ক ফোর্স বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কুয়েত, ইরান, জর্ডান, ইসরাইল ও মরোক্কো যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে দেয়।
ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে দিয়েছে।
আর্জেন্টিনা, চিলি, বেলজিয়াম, কলোম্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, এল সাভাদোর, এস্তোনিয়া, লাটভিয়ার কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে দিয়েছে।
সুইজারল্যান্ড, স্পেন, রোমানিয়া, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড ও কানাডা।
অস্ট্রিয়া সরকারও যুক্তরাজ্য থেকে ফ্লাইট নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।
সুইডেন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য থেকে তাদের দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গবেষকদের অবাক করেছে, তা হলো, এই ভাইরাসটি অনেক বেশি সহজে এবং দ্রুত ছড়াচ্ছে। আগেরটির তুলনায় এই নতুন করোনাভাইরাস ৭০ শতাংশ বেশি হারে ছড়াচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারকে যে শুক্রবার আচমকা আবারও কঠোর লকডাউন জারি করতে হয়েছ।এটি সরকারের মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক স্বীকার করেছেন যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল বলেই এই কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে হয়েছে। তিনি এমন ইঙ্গিতও দেন যে এবারের কঠোর লকডাউন দু’মাস ধরে চলতে পারে।
করোনাভাইরাস নতুন রূপের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগের কারণে অন্তত ৪০ টিরও বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের আগমনকে নিষিদ্ধ করেছে।
স্পেন, ভারত এবং হংকং সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইউকে থেকে ফ্লাইটগুলি স্থগিত করা হচ্ছে।
রবিবার সন্ধ্যায়, ফ্রান্স যুক্তরাজ্যের সাথে তার সীমানা ৪৮ ঘন্টা বন্ধ করে দেয়, যার অর্থ ডোভার বন্দর থেকে কোনও লরি বা ফেরি ছেড়ে যেতে পারবে না।
হুজুকে বাংগালী এ কথাটি সর্বজন স্বীকৃত। দেশে বিদেশে সবখানে। লন্ডনকে বলা হয় আর একটি বাংলাদেশ। সবদিক থেকেই এখানকার বাংলাদেশীরা অগ্রগামী। বাংলাদেশীদের বসবাস যেমন বেশী তেমনি ব্যাবসা প্রতিস্ঠান সহ সবকিছুই আছে এখানে। যে কোন দূর্যোগে ও সহযোগিতায় সবার আগে আমরা তেমনি করোনায় পেনিং বাইয়িং ক্ষেত্রেও আমরা।
যখনই শোনা গেছে করোনার নতুন রুপের কারনে ইউরোপ সহ সারা বিশ্বের সাথে গ্রেট ব্রিটেনের সকল ধরনের যোগাযোগ স্থগিত হচ্ছে বিশেষ করে ফ্রান্সের সাথে সড়ক পথে ৪৮ ঘন্টা কোন লরি যাতায়াত করবে না। তখন থেকেই শুরু হয়েছে এক মহা হুলুস্থল। যে যেভাবে পারছেন বেশী বেশী করে খাদ্য সামগ্রী কিনে মজুত করছেন।
এতে করে একদিকে যেমন জিনিস পত্রের শটেজ দেখা দিচ্ছে অপর দিকে জিনিস পত্রের দান হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে।
অথচ ব্রিটিশ সরকার সব সময় ক্রেতাদের বা জনসাধারনকে আশ্বস্থ্য করছেন। করোনাভাইরস মহামারির নতুন রুপের কারনে আক্রান্ত বেশী হচ্ছে। তাই সবাইকে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেই সাথে খাদ্যের কোন সমস্যা নেই বলেও বারবার বলা হচ্ছে। হয়তো সাময়িক অসুবিধা হবে তবে খাদ্যের কোন খাটতি নেই।