মো: রেজাউল করিম মৃধা: “মরার উপর খড়ার ঘা” এই খনার বচনটি এখন ব্রিটেনের জন্য। একদিকে ৭০ গুন বেশী শক্তিশালী নতুন করোনাইরাসের সমস্যায় জর্জড়িত অপর দিকে দক্ষিন আফ্রিকা থেকে আসা নতুন করোনাভাইরসটি এই সমস্যাকে বহু গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। বিপদ যখন আসে চারিদিক থেকে আসে।একটি সামাল দিতে না দিতে অন্যটি আরো জটিল আরো ভয়ংকর।
গত দুই সপ্তাহ আগে দুই জন যাত্রী দক্ষিন আফ্রিকা থেকে এসেছেন সাথে নিয়ে এসেছেন নতুন ধরনের করোনাভাইরস যা ছড়িয়ে পরে ইয়াংদের মাঝে সব চেয়ে বেশী। দক্ষিন আফ্রিকার হেল্থ মিনিস্টার জেইল এমহিজ বলেন,” নতুন এই করোনাভাইরস টি সব বয়সী মানুষের মাঝে ছড়ায় তবে ইয়াংদের মাঝে দ্রুত ছড়াচ্ছে।তিনি হুসিয়ারি করে বলেছেন, এই করোনাভাইরস মহামারির সময় কেউ ভ্রমনে যাবেন না। এতে আপনিও রোগে আক্রান্ত হবেন অন্যকেও আক্রান্ত করবে,”।
বড়দিন এবং বক্সিং ডে তে ইংল্যান্ডের পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্বের আরও কয়েক মিলিয়ন মানুষ সর্বাধিক টিয়ার-৪ লকডাউনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন, স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক ঘোষণা করেছেন।
স্থানগুলি সর্বোচ্চ স্তরের বিধিনিষেধে স্থানান্তর করা হয়েছে – যার অর্থ “বাড়ীতে থাকুন” নিরাপদে থাকুন। অর্ডার দিয়ে খাবার সংগ্রহ করুন । তবু বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে যাবেন না।
বেশ কয়েকটি অঞ্চল টিয়ার-৩ ও ২ স্তরে থাকবে ।
মিঃ হ্যানকক আরও প্রকাশ করেছেন যে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও একটি নতুন করোনাভাইরাস রূপ ইউকেতে সনাক্ত করা হয়েছে।এ জন্য আমরা আরো বেশী আতংকিত।
তিনি বলেছেন “গত দু’সপ্তাহে যে কেউ সেখানে ছিলেন তাদের অবশ্যই তাত্ক্ষণিকভাবে আলাদা করা উচিত”।
বুধবার যুক্তরাজ্যে আরও ৩৯,২৩৭ জন ভাইরাসের জন্য ইতিবাচক পরীক্ষা করেছেন – এটি সর্বকালের উচ্চ রেকর্ড ।
চূড়ান্ত স্তরে চলে যাওয়ার অঞ্চলগুলো হলো :-
নিউ ফরেস্ট , সাসেক্স, অক্সফোর্ডশায়ার, সাফলক, নরফোক, কেমব্রিজশায়ার, হ্যাম্পশায়ার এবং এসেক্স , তবে সারির অংশগুলি ইতিমধ্যে সবচেয়ে কঠোর বিধিনিষেধে নেই।
অতিরিক্ত ছয় মিলিয়ন লোক টিয়ার ৪ স্তরে থাকবে, সবচেয়ে কঠিন বিধিনিষেধের আওতায় থাকা মোট জনসংখ্যাকে ২৪ মিলিয়ন বা ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার ৪৩% করে নিয়ে যাবে। আরও ২৪.৮ মিলিয়ন স্তর ৩ হবে , মিঃ হ্যানকক আরও ঘোষণা করেছেন|
যে অন্যান্য অঞ্চলগুলি উচ্চ স্তরে চলে যাবে। ৩ স্তরের দিকে যাওয়ার অঞ্চল গুলি হলো:-
ব্রিস্টল, গ্লৌচেস্টারশায়ার, সোমারসেট সহ উত্তর সোমারসেট কাউন্সিল অঞ্চল, সুইন্ডন, আইল অব উইট, নিউ ফরেস্ট এবং নর্থাম্পটনশায়ার পাশাপাশি চেশায়ার এবং ওয়ারিংটন ঘোষনা অনুযায়ি টাওয়ার হ্যামলেটস সহ গোটা লন্ডনে টিয়ার ফোর বা সর্বোচ্চ মাত্রার লকডাউন জারি করা হয়েছে।
নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস যা অতি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং এ কারণে রাজধানীতে সংক্রমণের হার আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রাদুর্ভাব রুখতে ২০ ডিসেম্বর থেকে নতুন ও অতিরিক্ত বিধিনিষেধের আওতায় আমরা প্রবেশ করেছি।তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় বা অত্যাবশকীয় নয়, এমন সকল পণ্যের দোকান অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে।
যেমন:-হেয়ারড্রেসার, নেইল বারস এর মতো ব্যক্তিগত পরিচর্যার দোকান, অভ্যন্তরীন জিম ও লেজার ফ্যাসিলিটিজগুলোও বন্ধ থাকবে। অত্যাবশকীয় না হলে লোকজনকে অবশ্যই অন্যত্র ভ্রমণ বা যাতায়াত থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যেসকল ক্ষেত্রে সম্ভব ঘরে থেকে কাজ করতে হবে।’
দক্ষিন আফ্রিকা থেকে আসা নতুন করোনা ভারিয়েন্ট N501Y এটি এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পরে। বিশেষ করে ইয়াংদের দ্রুত ঘায়েল করে ফেলে। এই ভাইরাসের ভয়ে বিশ্ব আজ ব্রিটেনের সাথে সকল যোগাযোগ বিছিন্ন করেছে।