প্রথমবারের মতো নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করেছে ইরান। দেশটি বলছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বাইরে থেকে টিকা আনতে না পারলেও নিজেদের উদ্ভাবিত টিকা দিয়েই তারা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইরানের উদ্ভাবিত টিকার নাম রাখা হয়েছে কোভ-ইরানব্লেসিং। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সেতাদ জানিয়েছে, শিফা ফার্মড নামে তাদের একটি কোম্পানি এই টিকা উদ্ভাবন করেছে। সফলভাবে এই টিকার পরীক্ষা শেষ হলে প্রতিমাসে তারা এক কোটি বিশ লাখ ডোজ টিকা উৎপাদন করতে পারবে। পরীক্ষামূলকভাবে যেসব স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তারা এ প্রতিষ্ঠানেরই কর্মকর্তা কিংবা তাদের স্বজন। একজন উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তার কন্যাকে প্রথম এই টিকা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ মোখবার নামে এক উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার কন্যাকে প্রথম এই টিকা দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো এই টিকাটির ব্যাপারে যেন মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বার্তায় ইরানর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সায়ীদ নামাকি বলেছেন, ‘ইরানের জনগণের কাছে আমরা এই বার্তাই দিতে চাই যে, আমরা মানুষের শরীরে যে ইনজেকশন দেব, সেটিতে আমরা বিশ্বাস করি। যদি এখানে কোনও জটিলতা হয়, আমরা সবাই এবং আমাদের সবার পরিবার সেটা স্ব-ইচ্ছায় মেনে নেব।’
ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোখবার বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইরান গণহারে এই টিকা তৈরি করতে পারবে।
মহামারি শুরু হওয়ার পর হতে ইরানে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানেই সবচেয়ে বেশি মানুষ এই ভাইরাসে মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে আরও প্রায় ১২ লাখ মানুষ। ইরানের নেতারা বার বার অভিযোগ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা করোনাভাইরাসের টিকা আনতে পারছেন না। যদিও ওষুধপত্র এবং মানবিক ত্রাণ এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের টিকা সব দেশে বিতরণের জন্য যে কোভাক্স কর্মসূচী নিয়েছে, ইরান তাতে যোগ দিয়েছে।
ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, সরকারের এই উদ্যোগের পাশাপাশি তারা চীনের উদ্ভাবিত একটি টিকা আমদানির পরিকল্পনা করছে।