মিয়ানমারের মান্দালয়ে সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদে দুইজন নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির খ্যাতিমান একজন অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদ সমর্থন করায় এই অভিনেতাকে এতদিন খোঁজা হচ্ছিলো। আজ রোববার তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
রয়টার্স জানায়, সরকারি কর্মচারীদের ‘আইন অমান্য’ আন্দোলনে যোগ দিতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য যে ছয় খ্যাতিমান ব্যক্তির বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার আইনে সেনাবাহিনী গত বুধবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল অভিনেতা লু মিন তাদের একজন। মিনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে তার দুই বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
মিনের স্ত্রী খিন সাবাই এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ইয়াঙ্গনের তাদের বাড়িতে পুলিশ এসে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে। তারা শক্তি প্রয়োগ করে দরজা খুলে তাকে ধরে নিয়ে যায়, তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা আমাকে জানায়নি। আমি তাদের থামাতে পারিনি। তারা আমাকে জানায়নি।’ রয়টার্স জানিয়েছে, মন্তব্যের জন্য তারা বারবার সামরিক মুখপাত্র জ মিন তুনের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।
মিয়ানমারের আন্দোলনকারী গোষ্ঠী ‘অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার’ গতকাল শনিবার জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫৬৯ জনকে গ্রেপ্তার, অভিযুক্ত অথবা কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ঘটনায় শনিবার রাতে ইয়াঙ্গুনে একজন নৈশপ্রহরী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। রেডিও ফ্রি এশিয়ার বার্মিজ সার্ভিস বলেছে, পুলিশ তাকে গুলি করেছে কিন্তু কেন গুলি করেছে তা পরিষ্কার নয়।
সামরিক শাসনের অবসান এবং কারাবন্দি নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি ও অন্যান্যদের মুক্তির দাবিতে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের শহর ও নগরগুলোতে চলা বিক্ষোভে শনিবার ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। এদিন মান্দালয়ে বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ে পুলিশ ও সৈন্যরা। এ সময় দুইজন নিহত হন ও বহু লোক আহত হয়।
মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সেনাবাহিনী নতুন নির্বাচন করে বিজয়ীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা তা বিশ্বাস করতে পারছে না।