বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করা নিয়ে সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে তিনজনসহ মোট চারজন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে অপরজন প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলার গাবতলী উপজেলার বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফলাফল ঘোষণা না করায় নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা পুলিশ, বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জনগণকে ধাওয়া করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নারীসহ তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খোরশেদ আলম নামের আরো এক ব্যক্তি।
বুধবার সন্ধ্যায় গুলিতে নিহত তিনজন হলেন- কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা মো: খোকনের স্ত্রী উম্মে কুলসুম বেগম, মৃত ইফাত উল্লাহ’র ছেলে আব্দুর রশীদ ও মকবুলের ছেলে আলমগীর হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক।
বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল গোফ্ফার দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেছেন, ‘আমাদের কাছে নিহত তিনজনের নাম রয়েছে। পরে রাজ্জাক নামের একজনের লাশ গাবতলী হাসপাতালে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী জানান, নিহত তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা মো: খোকনের স্ত্রী উম্মে কুলসুম বেগম, মৃত ইফাত উল্লাহ’র ছেলে আব্দুর রশীদ ও মকবুলের ছেলে আলমগীর হোসেন।
এদিকে গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের জাইগুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের বাইরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকির হোসেন (২৭) নামের এক যুবক নিহত হন। বুধবার দুপুরে ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে বিরোধের জেরে জাকির খুন হন।
গাবতলী থানা পুলিশ জানিয়েছে, নিহত জাকির গাবতলী উপজেলার জাইগুলি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত লয়া মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় রঙ মিস্ত্রির কাজ করতেন। নির্বাচনে তিনি মেম্বার প্রার্থী সাইদুল ইসলামের (টিউবওয়েল প্রতীক) সমর্থক হিসেবে কাজ করছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদেরকে উৎসাহিত করার কাজ করছিলেন সাইদুল ইসলামের টিউবওয়েল প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা। এসময় সেখানে আরেক মেম্বার প্রার্থী মিঠু মিয়ার (ফুটবল প্রতীক) কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে জাকির হোসেনকে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে জাকির হোসেন মারা যান।















