এনাম চৌধুরী : ডাইন বাংলাদেশী ক্যাম্পেইন, ব্রিটিশ ক্যারী ইন্ডাস্ট্রি কিংবা রেস্টুরেন্ট সেক্টরের কর্মী সংকট মোকাবেলায় ব্রিটিশ সরকারের সাথে দেনদরবার করে নিজের দেয়া নাম ‘বিন্দালু ভিসা’র সফল স্বীকৃতি আদায়! সবখানেই একজন ক্যারী কিংয়ের সফল পদচারণা ছিল সরব। স্বজাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং অধিকার আদায়ে যিনি ছিলেন একজন ডায়নামিক ও কৌশলী নেতা। সেই স্বপ্নবাজ কিং এনাম আলী এমবিই‘র চিরবিদায় হয়ে গেলো ১৭ জুলাই।
বাংলাদেশী ক্যারী বিহীন যে ব্রিটিশদের জীবনের একদিনও চলেনা সেই ক্যারিকে হাউজহোল্ড ব্রাÐে পরিণত ও স্বীকৃতি আদায়ের নায়ক ক্যারী অস্কারের জনক এনাম আলী বিহীন হচ্ছে ২০২২-এর ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ড। ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ড’স এর দেড় যোগে ব্রিটিশ ক্যারী ইÐাস্ট্রিজ’র মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় স্বপ্নচারী মানুষটির হাত ধরে অনেক কিছুই যোগ হলেও সেই এনাম আলী বিহীন এবারের অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানকে বাবার স্বপ্ন পূরণে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে চান সন্তান জাস্টিন, জেফ্রী ও জাহিদ আলী। বাবা বিহীন এবারের ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ডস এর আয়োজন তাদের জন্য শোকের ছায়ায় আবৃত হলেও স্বপ্নকে মর্যাদার উচ্চ আসন দিতে তিন তরুণ-তরুণী ভাই-বোন মিলে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। আর সেভাবেই ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ডস টীমকে নিয়ে চলছে শেষ প্রস্তুতি। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।
২৮ নভেম্বর, সোমবার ক্যারী ক্যালেÐারের গণনার ঐতিহাসিক দিনটি জমকালো আয়োজনেই অনুষ্ঠিত হবে। ব্রিটিশ ক্যারি ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বর্ণাঢ্য এবং বৃহৎ আয়োজন ব্রিটিশ ক্যারি অ্যাওয়ার্ড এর পর্দা উঠবে এবং আয়োজনের দেড় যুগ পূর্তি এবার।্য়ঁড়ঃ;ইভেন্টমার্স্টায়ঁড়ঃ; খ্যাত (মরহুম)এনাম আলী এমবিই্#৩৯;র্ #৩৯;ব্রিটিশ ক্যারি অ্যাওয়ার্ড এর আয়োজনে আভিজাত্য এবং বর্ণিলতার যেমন কমতি থাকেনা তেমনি কমতি থাকেনা উপভোগ করার মতো পারফরমেন্সের। তবে তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবার ও স্বজন-শুভানুধ্যায়ীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এলেও ক্যারী ইÐাস্টির ক্ষণজন্মা সফল এ হিরো’র যুগান্তকারী অবদানকে বাঁচিয়ে রাখতে শোককে শক্তিতে পরিণত করেই এগিয়ে যাচ্ছেন জাস্টিন, জেফ্রী ও জাহিদ আলীর নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ ক্যারি অ্যাওয়ার্ড টীম।
সেন্ট্রাল লÐনের বাটারসি পার্কের ব্যতিক্রমী ও বর্ণিল অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে অতিথি হয়েছেন তৎকালীন দুই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন ও তেরেসা মে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন থেকে শুরু করে বিশ্বখ্যাত সেলিব্রেটিরা। অতিথি হয়ে ক্যারি অস্কার মঞ্চ প্রাণবন্ত করে গেছেন গর্ডন রামজির মতো সেলিব্রিটি শেফও।
মনোমুগ্ধকর আয়োজনে টেমস্ধসঢ়;-এর তীর যেন পুরোপুরি হাতছানী দিয়ে ডাকছে ব্রিটেনের কারি শিল্পের ‘অস্কার’ খ্যাত ব্রিটিশ কারি এওয়ার্ড। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তাঁর এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘ক্যারিবিহীন একটি সপ্তাহ আজ কল্পনা করেনা কোনো বৃটিশ নাগরিক।’ তিনি তার বক্তৃতায় আরো বলেছিলেন, চিকেন টিক্কা মসল্লা আমাদের প্রিয় খাবার। যারা প্রতিদিন এ উন্নত খাবার পরিবেশন করেন তারা ‘সেরা ব্রিটিশ’। ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা যে সেরা কিছু করতে পারে তার উজ্জল দৃষ্টান্ত হচ্ছে বৃটিশ ্য়ঁড়ঃ;ক্যারি অ্যাওয়ার্ডস্য়ঁড়ঃ; আর বাংলাদেশীদের এমন ইভেন্ট আয়োজনের স্বীকৃত ব্যতিক্রমী আইডল ছিলেন এনাম আলী এমবিই।
ব্রিটিশ অর্থনীতেতে বছরে প্রায় ফাইভ বিলিয়ন কর প্রদানকারী ক্যারী শিল্প যখন চরম সংকটের মধ্যে নিপতিত ছিল তখন কৌশলী বুদ্ধিভিত্তিক লবিংয়ের মাধ্যমে সংকট মোকাবেলায় বিরামহীন কাজ করেছেন তিনি।গলা উঁচু করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আমরা কারো অনুগ্রহ নয় অধিকার চাই। অর্থনীতির চালিকায় আমাদের অবদান ও কম নয়।
নিয়মের আবর্তে পড়ে দক্ষ স্টাফ সংকটের কারণে প্রতিদিন কেন আমাদের ব্যবসা কেন বন্দ হবে? পূর্ব পুরুষের শ্রম-ঘামে গড়ে তোলা শত বছরের স্বপ্নের বাতিঘর ্য়ঁড়ঃ;রেস্টুরেন্ট্য়ঁড়ঃ; শিল্পের জন্য ব্রিটিশ ক্যারি অ্যাওয়ার্ড হতাশার মাঝে অনেকেই আলোর প্রতিবিম্ব দেখেন এবং যারা অ্যাওয়ার্ড পান কিংবা যারা পান না তারা সকলেই আনন্দ চিত্তে বলেনÑ দুঃসময়ে অন্তত কেউ উঁচু গলায় বলতে পারছে ্য়ঁড়ঃ;আমরা ব্রিটিশ অর্থনীতিতে অবদান রাখছি, আমাদের অধিকারগুলো যথার্থভাবে দিতে হবে।
ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ডস’র প্রবর্তক মরহুম এনাম আলী নেই। তবে কমিউনিটির সুধীজন এবং ক্যারি শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা স্বপ্ন দেখেন বাবার মতোই স্বজাতির অধিকার সুরক্ষায় সোচ্চার থাকবে জাস্টিন- জেফ্রী ও জাহিদ। বাবার স্বপ্ন পূরণে প্রত্যয়ী মেধাবী উত্তরসূরীরা এগিয়ে যাবে আগামীর প্রত্যয়ে একজন এনাম আলীর স্বপ্ন পূরণে।
১৮তম ব্রিটিশ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে এবারও উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিখ্যাত সেলিব্রেটিরা। শিল্প, সাহিত্য, মিডিয়া, রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের পদচারণায় মুখরিত হবে। ব্রিটেন ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এবারও দু’হাজারের মতো অতিথি উপস্থিত থেকে এবারের অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রযোজক জেফ্রী আলী।
ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডস শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বমানের এ অনুষ্ঠানটি প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছেন মরহুম এনাম আলী এমবিই’র সুযোগ্য কন্যা জাস্টিন আলী। গত কয়েক বছর থেকে বোনের সাথে কাজ করছিলেন এনাম আলীর যুগ্য উত্তরসূরী জেফ্রী আলী।
এগারোতম ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে সরাসরি জনসম্মুখে আসেন তরুণ জেফ্রী। গত প্রায় ছয় বছর জেফ্রী আলীর প্রাণবন্ত উপস্থাপনা ছিল ব্রিটেনের নতুন প্রজন্মের তরুণদের জন্য উৎসাহ জাগানিয়া। সেই সাথে ইভেন্ট আয়োজনে বাবার মতো সফলতা পেতে প্রচেষ্টারও কমতি ছিলো না। ব্রিটেনের মূলধরার সংস্কৃতি অঙ্গনের সেরা শিল্পীদেরপরিবেশনায় থাকবে এবারো মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
বৃটিশ শিক্ষামন্ত্রী নিকি মর্গান এর ভাষায় “কারি আজ বৃটিশ হাউজ হোলড ব্রাÐ। এটি আজ শুধু ব্রিটেনে নয়, পুরো বিশ্বেই রপ্তানী হচ্ছে। ব্রিটেনের অর্থনীতিতে যোগান দিচ্ছে বিলিয়ন পাউন্ড।যা দিয়ে অর্থনীতি আরো সুদৃঢ় হচ্ছে।” নিকি মর্গানের এ সত্য উচ্চারণরণের সাহসী এক অভিযাত্রী ছিলেন এনাম আলী এমবিই। কারিশিল্পকে যিনি বিশ্বময় পরিচিতি দিয়েছেন ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডস এর মাধ্যমে। ক্যারিশিল্পের অস্কার খ্যাত ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডস’র এর মাধ্যমে সংকটে পড়া এই শিল্পের সাথে জড়িতদের রক্ষায় বাবার মতোই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জেফ্রী আলীর। তরুণ জেফ্রী বলেন, আমি দেখেছি ্য়ঁড়ঃ;ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ড্য়ঁড়ঃ; এর অনুকরণে এখন অনেকেই এ শিল্পের সাথে জড়িতদের প্রমোট করছেন যা আমার ভালো লাগে ও মনে হয় আমার বাবার পরিশ্রম বৃথা যায়নি।