সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন রওশন এরশাদ। বক্তব্যের শুরুতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। কথা বলতে গলা কাঁপছিল। রওশন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে এখানে আসতে পেরে আমি আপ্লুত হয়ে গিয়েছি। আপনারা সবাই ভালো থাকেন, সেই দোয়া করেছি।’
দলে ঐক্যের ডাক দিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একটি পরিবার। দীর্ঘদিন বিদেশে চিকিৎসা শেষে ঢাকায় আসার পর দলের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দলের সব বিষয়ে আমি অবগত আছি। নিজেদের মান-অভিমান ভুলে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি আরও বেশি শক্তিশালী হবে।’
এখন থেকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টি কখনো নির্বাচন বর্জন করেনি। সব সময় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকে জোর প্রস্তুতি নিতে হবে। তৃণমূল থেকে দলকে সংগঠিত করতে হবে। নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে যোগ্য, জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। দলীয় কর্মীদের মতামতকে মূল্যায়ন করতে হবে।

বছরের প্রথম দিনেই দল ঐক্যের স্বাদ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, কারণ দল ঐক্যবদ্ধ। জি এম কাদের-রওশন এরশাদ ঐক্যবদ্ধ। দেশে পরিবর্তন আনতে চাইলে নির্বাচনে যেতে হবে। আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘মিলমালিকেরা প্রতি কেজি চালে ৮ থেকে ১৪ টাকা লাভ করছেন। এঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। মানুষ আর পারছে না। বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ—এসব প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করেন। এগুলো ঠিক না হলে যে জাতি আমরা গড়তে চাই, তা গড়া সম্ভব হবে না।’
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘কেউ কেউ বলে, জাতীয় পার্টিতে ঐক্য নেই। কোথায় ঐক্য নাই? এই দেখেন ঐক্য। এই যে রওশন এরশাদ, এই যে জি এম কাদের। ঐক্যবদ্ধভাবেই রংপুরে মোস্তাফিজারকে জিতিয়ে আনা হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও ৩০০ আসনে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবে জাতীয় পার্টি।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি এক ও অভিন্ন। দলে ভাঙা-গড়ার রাজনীতি চলবে না। দলের ভেতরেও কেউ যদি ষড়যন্ত্রকারী থাকেন, সতর্ক হন। ছাড় দেওয়া হবে না।’
