মো: রেজাউল করিম মৃধা : ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় আরো একটি বছর ২০২১।চিরাচরিত নিয়মানুসারে আতশবাজি ফুটিয়ে বরণ করা হলো নতুন বছর ২০২২।
করোনাভাইরাস মহামারি পাল্টে দিয়েছে জীবনের গতি।সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় এমনকি সর্বজনীন উৎসব নববর্ষ উৎযাপনে এসেছে আমুল পরিবর্তন। উৎসবের চেয়ে জীবনে বেঁচে থাকাই এক মহা চ্যালেন্জ। আর তাই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় বড় উৎসব গুলি পালিত হয়েছে জনশূন্য অবস্থায়।
ইংরেজী নববর্ষ বিশ্বের সব মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব।নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের এবং বড় বড় শহর গুলির বিশেষ স্থানে আতশবাজি ফুটিয়ে নববর্ষকে বরণ করা হয়। নির্দিষ্ট স্থানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়।
কিন্তু কভিড-১৯ মাহামারির নতুন ওমিক্রন ভ্যারীয়েন্টের কারনে এ বৎসর জনসাধারন ছাড়া শুধু আতশবাজি ফুটিয়ে নতুন বর্ষকে বরণ করা হয়।
বিশ্বের অন্যান্য শহরের মত লন্ডন শহরও একটি বৃহৎ শহর এই শহরের লন্ডন আইর কেন্দ্র স্থলে আতশবাজি ফুটিয়ে নববর্ষকে বরণ করা হয়। এই উৎসবে হাজির হন বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ। প্রথম দিকে জনসাধারনের জন্য লন্ডন আই প্রবেশ উন্মুক্ত থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে জনসাধারন বেশী হওয়াতে টিকিট সিস্টেম করা হয়েছিলো । তারপরও উৎসুক জনসাধারনের উপস্থিতি বেড়েই চলছে কিন্তু ওমিক্রনের আক্রান্তের কারনে এ বৎসর উৎসব ঘরে বসে পালন করা হয়েছে।বন্ধ ছিলো লন্ডনের বড় স্থানের বড় আতশবাজি উৎসব।
করোনাভাইরাস মহামারির কারনে গত বছরের মত এবছর ও লন্ডনে আতশবাজির প্রদর্শনী হয়েছে তবে বাতিল বলে ঘোষনা করা হয়েছে জনসাধারন প্রবেশ।কোভিডের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার জন্য গত বছরের ন্যায় এই বছর আবার লন্ডনের টেমস নদীর তীরে লন্ডন আই এর সামনে পাশেই বিগ বোন এবং ওয়েস্টমিনিস্টা এর আঁশেপাশের এলাকায় ও বিভিন্ন ব্রিজের পাশে নির্দিষ্ট স্থানে চমৎকার আতশবাজি প্রদর্শন করে নববর্ষ ২০২২ কে স্বাগত জানানো হয়েছে।সব ধরনের বড় অনুস্ঠান গুলি বাতিল করা হয়েছিলো।
এক কথায় নতুন বছর ২০২২।করোনা পরবর্তীতে একটি সুন্দর বিশ্ব দেখতে চাই। বলা যতটা সহজ, বাস্তবে কি কতটা সহজে হবে? সেই সুন্দর বিশ্ব বা পৃথিবী গড়তে সবাইকে সুন্দর মন নিয়ে, হিংসা বিদ্বেষ ভুলে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে।
যদিও কেউ বা বলেন, করোনা মানুষের সৃস্টি। আবার কেউ বা বলেন, আল্লাহর গজব। এ নিয়ে অনেক যুক্তি তর্ক আছে। আছে মতভেদ।তবে অনেকেরই ধারনা চায়নার উহানে প্রাণী থেকে ভাইরাস এসেছে। গবেষকরা বলেন,”মৃত্যু প্রাণীর মাঝ থেকে করোনাভাইরাস এর উৎপত্তি হয়েছে,”। আবার অনেকের মতে আল্লাহর গজবের মত হতে পারে। আল্লাহ যে গজব বা মহামারি দিবেন তাওতো কোন না কনো উছিলার মাধ্যমে দিয়ে থাকেন।
মানুষ যখন বেশী অত্যাচারী হয়ে উঠে। আল্লাহ তখন গজব বা মহামারিতে শাস্তি দিয়ে হেদায়েত করে থাকেন।আবার অনেকই মনে করেন এটা উহানের একটি ল্যাব থেকে করোনাভাইরস তৈরীর সময় লিক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে যেটাই হোক এটা যে চায়নার উহান থেকে উৎপত্তি বা সৃস্টি হয়েছে এই টাই সত্যি।
আমরা এমন একটা পৃথিবী চাই যেখানে সম্পদের কোনো কেন্দ্রীকরণ থাকবে না, তাহলেও সেটাই আমাদেরকে করতে হবে। পৃথিবীতে মানুষের অসাধ্য কিছু নেই।যেমন সত্যি তবে আল্লাহর উপর পূর্ন আস্থা রেখেই চলতে হবে।পৃথিবীর সব গবেষকরা শেষ পর্যন্ত ঐশরিরক শক্তিকে বিশ্বস করেন।
সবচাইতে বড় সুসংবাদটি হচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারি সংকট আমাদেরকে একেবারে নতুন করে সবকিছু শুরু করার প্রায় সীমাহীন একটা সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে। আমরা আমাদের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারগুলো প্রায় নতুন করে তৈরী করার কাজ শুরু করতে হবে।করোনা উত্তর পুনর্গঠনকে হতে হবে সামাজিক সচেতনতা চালিত পুনর্গঠন শুধু একটি বিষয়ে বৈশ্বিক ঐকমত্য আমাদেরকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
একটি সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত আমাদের নেওয়া অতি জরুরী। আমরা করোনাভাইরাসের পূর্বে যেখান ছিলাম সেখানে আর ফিরে যেতে চাই না। পুনরুদ্ধারের নামে আগের সেই জ্বলন্ত কড়াইতে ঝাপ দিতে চাই না। আমরা চাই করোনামুক্ত সুন্দর এর পৃথিবী। যেখানে সবাই মিলে সুস্থভাব বেঁচে থাকতে পারি।
সারা বিশ্বে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। তবে সেক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম। এখন মানুষ অনেক স্বচেতন হয়েছেন। খাবারে পরিবর্তন এনেছেন। অভ্যাসের পরিবর্তন এনেছেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেস্টা করে যাচ্ছেন। মুখে মাক্স পরিধান করছেন। রোগ সম্পর্কে ধারনা জন্মেছে। মনে সাহস এসেছে । মনের সাহস হচ্ছে সব চেয়ে গুন। মনে সাহস রেখে সরকারের বিধিনিষধ মেনে চললে। সামাজিক ও পারিবারিক বৃহৎ অনুস্ঠান পরিহার করে চলতে পারলে করোনাভাইরস মহামারিকে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
শুভ ইংরেজী নববর্ষ ২০২২।