রাইম ইসলাম শিমু, বাংলাদেশের সিনেমা জগতের এক সময়ের জনপ্রিয় এক অভিনেত্রীর নাম। তবে বর্তমানে তার নামটি আলোচনায় থাকার কারন একটাই আর তা হলো তার মৃত্যু। নিজের স্বামীর হাতেই হত্যা হয়েছেন শিমু। আর এই ঘটনা এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিনিত হয়েছে।
এ দিকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম ওরফে শিমুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।
চ্যানেল আই অনলাইনকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে গ্রিন রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় খোকন বলেন, আজ আসরবাদ শিমুর জন্য মিলাদ দেওয়া হয়েছে। এ সময় শিমুর শ্বশুর ও ননদসহ পরিবারের অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আমাদের পক্ষ থেকেও অনেকে মিলাদে অংশ নেন। শিমুরার দুই সন্তানও সেখানে ছিল।
খোকন জানান, আজ শিমুর শ্বশুর ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারাও হতবাক। এমন নির্মম ঘটনায় তারাও বাকরুদ্ধ। শিমু-নোবেলের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এই মুহূর্তে নয়, পরবর্তী সময়ে ভাবছেন তারা ঠিক করতে চান।
খোকন বলেন, শিমুকে হত্যার কথা স্বীকার করে আমরা তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তার সহযোগী ফরহাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। প্রতিমাবা স্বীকার করেছে, তবে আমরা জানতে চেয়েছিলাম কেন এবং কীভাবে আমার বোন শিমুকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের ধৈর্য ধরতে বলেছে।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) অভিনেত্রী শিমুকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের বিষয়ে কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন অভিভাবকরা। পরে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে জিডিএসে মামলা হয়।
সোমবার তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কেরানীগঞ্জ থেকে একটি বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে শিমুর পরিবার লাশ শনাক্ত করে।
১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেন শিমু। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয়। পরবর্তীতে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষী নজরুল ইসলাম, শরীফ উদ্দিন খান দিপুসহ বেশ কয়েকজন পরিচালক সিনেমাটিতে অভিনয় করেন।
বেশ কয়েক বছর ধরে একটি বেসরকারি টিভি স্টেশনের মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন শিমু। টুকটাক নাটকে কাজ করতেন। এছাড়া তার নিজস্ব নাটক প্রোডাকশন হাউস ছিল বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গতম গত রোববার বাসা থেকে শুটিং এর উদ্দেশে বেড়িয়ে যান শিমু। এরপর থেকেই আর খোজ পাওয়া যাচ্ছিল না তার। শেষ পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সনাক্ত করা হয় তাকে। তবে সেখানে গিয়ে দেখা মেলে বস্তা বন্দি মৃত শিমুর। আর এই ঘটনায়ই গ্রেফতার করা হয় তার স্বামী ও স্বামীর বন্ধুকে।