বাজেটে ট্যাক্স কমানোর ঘোষণা দিয়ে নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট। কয়েক সপ্তাহ আগেও চ্যান্সেলর বলেছিলেন, ট্যাক্স কমানোর মতো পরিস্থিতি নেই। কিন্তু এখন বলছেন, ট্যাক্স কমানো সম্ভব। সুদের হার বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড চলতি বছর মূল্যস্ফীতিকে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তাই চ্যান্সেলর মনে করেন, অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি আনার এখনই সময়।
বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের আগে থেকে যে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছিল, তা হচ্ছে ট্যাক্স কমাবে সরকার। সবচেয়ে বেশী আলোচিত হচ্ছে ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স হ্রাসের বিষয়টি। ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। আগামী জানুয়ারি মাস থেকেই নতুন হারের ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ট্যাক্স কার্যকর হবে।
অর্থনীতিতে গত আনতে সরকার আরও একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা থেকে নতুন যন্ত্রপাতি কেনার খরচ বাদ দিতে পারবেন, যাতে তাঁরা কম ট্যাক্স আদায় করতে পারেন।
বাজেটে আর যেসব ঘোষণা আছে তাঁর মধ্যে রয়েছে, আগামী এপ্রিল থেকে বেনিফিট বাড়বে ৬.৭ শতাংশ; সরকারি পেনশন বাড়বে সাড়ে ৮ শতাংশ; আর ২১ এবং তদূর্ধ্ব বয়সের কর্মীদের ঘণ্টায় সর্বনিম্ন জাতীয় মজুরী হবে ১১ পাউন্ড ৪৪ পেন্স। এছাড়া যারা কাজ পাচ্ছেন না তাদেরকে কাজ খুঁজে দিতে সরকার সহায়তা করবে বলেও বাজেটে ঘোষণা দেন জেরেমি হান্ট। ১৮ মাসেও কাজ না পেলে বেনিফিটগ্রহীতাকে কাজ খুঁজে দিয়ে সেই কাজে যেতে বাধ্য করা হবে। আর কাজ খুঁজে বের করার কাজে জব সেন্টারের সাথে সহযোগিতামূলক আচরণ না করলে ছয় মাস পর বেনিফিত বন্ধ করে দেয়া হবে।
এই সরকারের আমলে রেকর্ড হারে ট্যাক্স বেড়েছে। সামগ্রিক অর্থে করের বোঝা আসলে এখনও বাড়ছে। মূল্যস্ফীতির কারণে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বেতন বাড়লেও ট্যাক্সও বেড়েছে। তাই অর্থনীতি থেকে সরকারের কোষাগারে ট্যাক্স আকারে চলে যাচ্ছে আগের চেয়ে বেশী অর্থ। লেবার দল এই গোলক ধাঁধাটি পার্লামেন্টেই ধরিয়ে দিয়েছে।
প্রধান বিরোধী দলের পর একের পর এক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সাধারণ এমপিরা বাজেট প্রস্তাবের ওপর নিজেদের বক্তব্য ও সংশোধনী প্রস্তাব করছেন।
রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় মোকাবেলা করছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল; এর উপর সামনে সাধারণ নির্বাচন। নতুন বাজেট দিয়ে তাই জনগণকে খুশী করার চেষ্টা করছে সরকার। আগামী কয়েক দিন বাজেটের ওপর আলোচনা ও বিতর্ক থেকে বোঝা যাবে বাজেট প্রস্তাব জনগণের কাছে কতোটা বিক্রি করতে সমর্থ হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল।