ন্যায় বিচার পাওয়া (access to justice) আইনের শাসনের প্রধান স্তম্ভ। যে সমাজে আইনজীবীদের মান যত ভাল সে সমাজে আইনের শাসন ও বিচার প্রক্রিয়ার মানও তত ভাল। অসুস্থ হলে মানুষ অনন্যোপায় হয়ে চিকিৎসকের কাছে যায়, ঠিক তেমনি অবিচারের শিকার হয়ে কোন উপায় না পেয়ে অসহায় অবস্থায় মানুষ অধিকার পেতে বা সুবিচার নিশ্চিৎ করতে আইনজীবীদের শরণাপন্ন হয়। আইনজীবীরা তাদের সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে তাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে বা অধিকার ফিরে পেতে সহায়তা করেন। সাধারণ জনগণের বিচার ব্যবস্থায় সহজ প্রবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে আইনের শাসন কেবল থিউরী বা কিতাবের মধ্যেই থাকবে। ১৯৬৬ সালে বৃটেনে প্র্যাকটিসরত কোন সলিসিটর দেখিনি। ভাল লাগছে আজ বৃটেনে শত শত আইনজীবী দক্ষতার সাথে মেইনস্ট্রীমে প্র্যাকটিস করছেন।
ব্যারিস্টার নাজির আহমদের সাথে আমার পরিচয় ও ঘনিষ্টতা দীর্ঘদিনের। মাল্টি টেলেন্টেড পারসোনালিটি ব্যারিস্টার নাজির আহমদ বৃটেনে বৃটিশ-বাংলাদেশীদের কাছে এক সুপরিচিত নাম, আইনের ক্ষেত্রে এক আস্থার জায়গা। আমিও তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় আইনি বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে থাকি। ব্যারিস্টার নাজির আহমদের সুদীর্ঘ ২৫ বছরের অভিজ্ঞতালব্দ আইনি জ্ঞানের মাধ্যমে নতুন চ্যাম্বারে বৃহত্তর পরিসরে আরও ব্যাপকভাবে দক্ষতার সাথে আইনী সহায়তা দিয়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।
গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪) লন্ডনে প্রতিথযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজির আহমদের ল চ্যাম্বারের গ্র্যান্ড অপেনিং-এ বাংলাদেশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। উল্লেখ্য আড়াই দশক থেকে আইনী সেবা দিয়ে আসা বৃটেনের সুপরিচিত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার নাজির আহমদের ল ফার্ম লিংকন্স চ্যাম্বারস সলিসিটরস নতুন ঠিকানায় বৃহত্তর পরিসরে নবযাত্রা শুরু করলো। শুক্রবার জু’মার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শতাধিক আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি/পেশার প্রায় তিন শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিদের পদচারনায় চ্যাম্বারটি ছিল মুখরিত। ব্যারিস্টার নাজির আহমদ ও তাঁর সদ্য ব্যারিস্টারী পাশ করা মেয়ে ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদ অতিথিদেরকে স্বাগত জানান ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অতিথিদেরকে বিভিন্ন মিষ্টান্ন, কোমল পানীয় এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী এশিয়ান খাবারের মাধ্যমে আপ্যায়িত করা হয়। অতিথিরা মিষ্টি, কেক ও ফুল দিয়ে ব্যারিস্টার নাজির আহমদকে অভিনন্দন জানান।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এক সংক্ষিপ্ত অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফিতা কেটে নতুন অফিস উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, চ্যানেল এস-এর ফাউন্ডার মাহী ফেরদৌস জলিল, বৃটিশ ট্রাইব্যুনাল ও কোর্ট অব প্রটেকশনের জজ নজরুল খসরু, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতা কেএম আবু তাহের চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের (জিএসসি) সেন্ট্রাল চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার আতাউর রহমান প্রমূখ।
গ্র্যান্ড অপেনিং-এর পূর্বে ব্যারিস্টার নাজির আহমদের সভাপতিত্বে ও আইনজীবী আমিন চৌধুরীর পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও দোয়া পরিচালনা করেন বৃটেনের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী চিন্তাবিদ ও ইউরোপের বৃহৎ মসজিদ ইস্ট লন্ডন মস্কের প্রধান খতিব এবং মালয়েশিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক শাঈখ আব্দুল কাইয়ুম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চ্যানেল এস-এর ফাউন্ডার মাহী ফেরদৌস জলিল, ট্রাইব্যুনাল ও কোর্ট অব প্রটেকশনের জজ নজরুল খসরু, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতা কেএম আবু তাহের চৌধুরী, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (বিবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রেনু জেপি, সোসাইটি অব বৃটিশ বাংলাদেশী সলিসিটরস (এসবিবিএস)-এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট সলিসিটর সহুল আহমদ, বিবিসিসিআই-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর শাহগীর বখত ফারুক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারী সাংবাদিক তাইসির মাহমুদ, সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, তাজ সলিসিটরস-এর কর্ণধার ব্যারিস্টার তাজ শাহ, কমিউনিটি নেতা মীর্জা আসহাব বেগ, এমকিউ হাসান সলিসিটরস-এর প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার এমকিউ হাসান, বাংলাদেশের সাবেক জজ ব্যারিস্টার মুজিবুর রহমান, চার্টার্ড একাউনটেন্ট এম এ মুহিত, আইনজীবী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নাশিত রহমান প্রমূখ।
বক্তারা ব্যারিস্টার নাজির আহমদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তিনি বহুমূখি প্রতিভার অধিকারী। সমাজ ও কমিউনিটির সবক্ষেত্রে তাঁর বিচরণ। প্রচন্ড ব্যক্তিত্বশালী ও অত্যন্ত অমায়িক ব্যবহারের অধিকারী ব্যারিস্টার নাজির আহমদকে বৃটেনের বাঙ্গালী কমিউনিটি এক আস্থা ও বিবেকের জায়গা মনে করেন। মিডিয়ায় তাঁর লেখা ও কথা এবং জনগণকে আইনী সেবা দেয়ার ধরণ এক কথায় অনন্য। বক্তারা ব্যারিস্টার নাজির আহমদ ও তাঁর চ্যাম্বারের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন।
এছাড়া দুপুর থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় যারা ভিজিট করেছেন ও অভিনন্দন জানিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন: মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের (এমসিবি) সাবেক সেক্রেটারী জেনারেল ড. এম এ বারী এমবিই, এসবিবিএস-এর প্রেসিডেন্ট সলিসিটর ফরিদা হাকিম, চ্যানেল এস-এর হেড অব নিউজ সাংবাদিক কামাল মেহেদী, ব্যারিস্টার সৈয়দ আফজাল জামি, এসবিবিএস-এর সেক্রেটারী জেনারেল সলিসিটর মেহেদি হাসান, ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী, টিভি ওয়ান-এর সিনিয়র সাংবাদিক জাকির হোসেন কয়েছ, সাংবাদিক ফয়ছল মাহমুদ, ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন সুমন, ব্যারিস্টার জিন্নাত আলী, সলিসিটর জহির আহমদ, চ্যানেল এস-এর সিনিয়র প্রডিউসার আহাদ আহমদ, ব্যারিস্টার নুরুল গাফফার, বাংলা ভিশনের ইউকে ব্যুরো ইনচার্জ সাংবাদিক এম এ হান্নান, মানবজমিনের ইউকে প্রতিনিধি খালেদ মাসুদ রনি, এসবিবিএস-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট সলিসিটর দেওয়ান মেহেদী, একাউন্টেন্ট নুরুজ্জামান, ব্যারিস্টার এম এ মুহিত খান, ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী, ব্যারিস্টার শহীদুল ইসলাম মামুন, ব্যারিস্টার সাইফুউদ্দিন খালেদ, চ্যানেল এস-এর সিনিয়র রিপোর্টার রেজাউল করিম মৃধা, সলিসিটর হিফজুর রহমান, ব্যারিস্টার খালেদ নূর, সলিসিটর মুহাম্মদ সেলিম, সাংবাদিক এমএ কাইয়ুম, ব্যারিস্টার সাইয়্যিদ বাকী, সলিসিটর ইমরুল হোসাইন শেখ, বিবিসিসিআই-এর ডাইরেক্টর আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক জুবায়ের আহমদ, একাউন্টেন্ট রাব্বীর হাসাইন, সাংবাদিক খান জামাল নুরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এনামুল হক, সাংবাদিক হাসনাত চৌধুরী, ট্রেভেল লিংকের কর্নধার সামি আব্দুল্লাহ, সাংবাদিক আমিনুর চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী মিসবাহ উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর ও ঔপন্যাসিক শাহ সোহেল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাসিনুজ্জামান নূরু ও ফারুক মিয়া প্রমূখ।
ব্যারিস্টার নাজির আহমদ আমন্ত্রিত সব অতিথিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন বিগত আড়াই দশকের আইনী ক্যারিয়ারে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলার চেষ্টা করেছি। বিবেকের দ্বায়বদ্ধতা ও পরকালের জবাবদিহীতা ছিল আমার আইনী ক্যারিয়ারের গাইড। কোন মামলার মেরিটের ব্যাপারে চুল পরিমান না বাড়িয়ে যা যা আছে তাই বলা এবং তার উপর ভিত্তি করে যথাসম্ভব প্রফেশনাল যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে সহযোগীতার চেষ্টা করেছি ক্লাইন্টদের সুবিচার নিশ্চিত করতে ও অধিকার ফিরে পেতে। এর বিনিময়ে পেয়েছি অসংখ্য মানুষের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালবাসা। আর এগুলোই আমাদের চলার পথে পাথেও হিসেবে থাকবে। ভবিষ্যতে আমি আমার মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে আমার বাংলাদেশী কমিউনিটিসহ সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করে যেতে বদ্ধপরিকর।