শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার পর সপ্তাহান্তে ব্রেক্সিট পরবর্তী সম্পর্কের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ব্রিটেনের আলোচনার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে বিষয়টির নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এখবর জানিয়েছে।
১ জানুয়ারি ব্রিটেন পাকাপাকিভাবে ইইউ ত্যাগ করলে দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যসহ বাকি সম্পর্ক স্থির করতে চুক্তি এখনও অধরা রয়ে গেছে। চুক্তি স্বাক্ষর ও অনুমোদনের জন্য সময়ও প্রায় শেষ। বৃহস্পতিবার ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি চূড়ান্ত করতেই হবে। সেই অনুযায়ী নতুন বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রস্তুতি নিতে হবে। চুক্তি সম্ভব হলেও সীমান্তে ব্যাপক যানজট ও জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে। চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রে সেই মাত্রা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।
প্রায় আট মাসে যা সম্ভব হলো না, মাত্র দুই দিনে সেই অসাধ্যসাধনের প্রচেষ্টা কতটা ফলপ্রসু হবে, সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না। ইইউ ও ব্রিটেনের মধ্যস্থতাকারীরা সপ্তাহান্তে হাল ছেড়ে দেওয়ার পর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন টেলিফোনে আলোচনার পর শেষ চেষ্টা চালাতে সম্মত হন। তারই ধারাবাহিকতায় রবি ও সোমবার দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা আবার মুখোমুখি হচ্ছেন। সোমবার সন্ধ্যায় জনসন ও ফন ডেয়ার লাইয়েন আবার টেলিফোনে কথা বলে সম্ভবত চূড়ান্ত ঘোষণা করতে চলেছেন। সোমবারই সব বিষয়ের নিষ্পত্তি না হলে আলোচনার সময়সীমা আরও বাড়ানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের জলসীমায় ইইউ দেশগুলির জেলেদের মাছ ধরার অধিকার নিয়ে বিরোধ মিটে গেছে। ফলে বিরোধের তিনটি বিষয়ের মধ্যে একটির নিষ্পত্তি হয়েছে। ব্রিটেনের সরকারের এক সূত্র অবশ্য এমন সাফল্যের দাবি অস্বীকার করেছেন। ইইউ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
ভবিষ্যতেও অভ্যন্তরীণ বাজারের নাগাল পেতে হলে ব্রিটেনকে ইইউ পরিবেশ, সামাজিক ও শ্রম সংক্রান্ত মানদণ্ড মেনে চলার শর্ত রেখেছে ব্রাসেলস। সেইসঙ্গে বিরোধ মেটাতে স্পষ্ট আইনি প্রক্রিয়াও স্থির করার দাবি জানাচ্ছে ইইউ। এই দুটি বিষয়েরও নিষ্পত্তি হলে চুক্তি সম্ভব হতে পারে। তবে সোমবারই সেই সাফল্য নাও আসতে পারে।
ব্রিটেনের সঙ্গে ইইউ’র দরকষাকষির ক্ষেত্রে বিশেষ করে ফ্রান্স অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিচ্ছে। ব্রিটেনকে খুব বেশি ছাড় দেওয়া হলে সে দেশ এমনকি চুক্তি বানচাল করতে ভেটো প্রয়োগের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড নিজস্ব স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতে চুক্তি চাইছে। ইইউ কমিশন তথা ইইউ মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে আলোচনার কাঠামোর সীমা অতিক্রম না করে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবারই বার্নিয়ে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাচ্ছেন।