রফিকুল ইসলাম কামাল (বিশেষ প্রতিনিধি, সিলেট) : ফ্রান্সে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র আঁকার প্রতিবাদে সিলেটে বড় আকারের বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। শনিবারের এই কর্মসূচিতে শক্তির মহড়া দেখিয়েছে হেফাজত। সমাবেশ থেকে সরকারের উদ্দেশ্যে এসেছে তিন দফা দাবিও।
সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশকে ঘিরে গেল কয়েকদিন ধরে ব্যাপক তৎপর ছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। নতুন নেতৃত্বকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো এই কর্মসূচিতে যাতে ব্যাপক লোকসমাগম হয়, সেজন্য সিলেটের উপজেলা পর্যায়েও প্রচারণা চালানো হয়। এমনকি সমাবেশে সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলো থেকেও নেতাকর্মীদের নিয়ে আসার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করে হেফাজত। সকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনযোগে সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন সমাবেশস্থলে। দুপুরের দিকে ভরে যায় রেজিস্ট্রারি মাঠ। পরে আশপাশের সড়কেও অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। এতে নগরীর অন্য সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ তৈরি হওয়ায় যানজটের দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।
সমাবেশে যোগ দিতে বিমানযোগে সিলেটে আসেন হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী।প্রধান অতিথি বক্তব্যে বাবুনগরী বলেন, ‘নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত হলো হেফাজতের কর্মসূচী। হেফাজত বাংলাদেশে নামাজ কায়েম করতে চায়। হেফাজত সরকারবিরোধী সংগঠন নয়, আবার সরকারদলীয় সংগঠনও নয়। যারা ইসলামের শত্রু, রাসূলের দুশমন তাদেরকে ধ্বংস করতে, নাস্তিক, মুরতাদদের কবর রচনার জন্য হেফাজতে ইসলামের অভ্যুদয়।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বের দুইশত কোটি মুসলমানের ভালোবাসার প্রতীক রাসূল (সা.) এর বিরুদ্ধে ফ্রান্স সরকার ব্যঙ্গ করে মুসলমানদের কলিজায় আগুন লাগিয়েছে।’
তিনি কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা করে বলেন, ‘আমি মনে করি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও কাদিয়ানীদেরকে মুসলিম বলে মনে করেন না। রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদেরকে কাফের ঘোষণা করতে হবে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দেশ মদিনা সনদে চলবে। তাই মদিনা সনদের সাথে সাংঘর্ষিক কাজ শক্তভাবে দমন করতে হবে।’
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস আল্লামা জিয়া উদ্দীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহাসচিব আল্লামা নূর হুসাইন কাসিমী, নায়েবে আমির ড. আহমদ আবদুল কাদের, উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতী রশিদুর রহমান ফারুক বর্ণভী, শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক আকুনী, নায়েবে আমির শায়খুল হাদীস আল্লামা নূরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মাওলানা আবদুর রকীব ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন।
এদিকে সমাবেশ থেকে সরকারের উদ্দেশ্যে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করতে হবে, সিলেটে হোটেলসমূহে মদের অনুমোদন বাতিল করা ও মাদকের অবাধ ছডাছডি বন্ধ করতে হবে এবং পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।