নিউজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন আইনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। হোম অফিস কর্তৃক ঘুষিত নতুন নিয়মে ওয়ার্ক পারমিট এবং স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে শর্তগুলো শিথিল করা হয়েছে। অক্টোবরের ৫ তারিখ থেকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। ১লা জানুয়ারি ২০২১ থেকে ব্রিটেনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রেও শর্ত শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। এর ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও কাজের জন্য আসতে আগ্রহীদের যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা ও কাজের সুযোগ পুনরায় উন্মুক্ত হতে চলেছে।
সাম্প্রতিক হোম অফিসের ঘোষনায় বলা হয়েছে যে , ২০২০ সালের ‘টিয়ার ফোর স্টুডেন্ট’ ভিসায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ৪০ পয়েন্ট থেকে এখন তা ৭০ পয়েন্ট করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কনফার্মেশন অব অ্যাকসেপট্যান্স স্টাডিজ (সিএএস) প্রাপ্ত পেপারে ৫০ পয়েন্ট, ল্যাংগুয়েজে ১০ পয়েন্ট এবং ১০ পয়েন্ট মেইন্টেনেন্সের জন্য । ২০২০ সালের অক্টোবরের ৫ তারিখের পর যারা ব্রিটেনে আসবেন তাদেরক্ষত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। এরই মধ্যে এই নিয়মের সুযোগ গ্রহণ করতে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যোগাযোগ করা শুরু করেছেন। এখন কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় ছাড়া কোনও শিক্ষার্থী আসতে পারছেন না। এক্ষত্রে কাজের সময়সীমা প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টার অনুমোদন দিয়া হয়েছে কিন্তু স্টুডেন্টদের ডিপেন্ডেন্টদের (স্বামী/ স্ত্রী) ক্ষেত্রে এখন ফুলটাইম কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছে নতুন আইনে । ডিগ্রি কিংবা মাস্টার্স পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী লেখাপড়া শেষ করার পর ২ বছর ও ডক্টরেট বা পিএইচডি পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী ৩ বছর ফুল টাইম কাজের সুযোগ রাখা হয়েছে ।
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট ইমিগ্রেশন সলিসিটর এবং ব্যারিস্টার জনাব মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ বলেন, বিলেতে সবসময় শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম শ্রেষ্ট দেশ হিসেবে দীর্ঘ দিনের সুনাম রয়েছে। কিন্তু ইমিগ্রেশন আইনের কঠোর শর্তের কারণে ব্রিটেন বিদেশী শিক্ষার্থীদেরকে আকৃষ্ঠ করতে পারেনি। নতুন এই আইনে আবারো অনেক শিক্ষার্থী বিলেতে পড়াশুনার সুযোগ পাবে। তিনি বলেন , এই আইনের অপব্যবহার হওয়ার ও সম্বাবনা আছে। তাই কোনো এজেন্টের উপর নির্ভর না হয়ে প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে ভর্তি হতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এ ব্যপারে ইমিগ্রেশন আইনজীবী এবং ওয়ার্ক পারমিট বিশেষক্ষ ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান বলেন, শর্টেজ ওকোপেশন লিস্টে ক্যাটারিং ম্যানেজার, কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার থেকে শুরু করে নির্মাণ বা বেকারি কর্মী, কেয়ারারসহ বহু পেশার মানুষের ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ব্রিটেনে আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওয়ার্ক পারমিটে যারা আসবেন তারা পাঁচ বছর পর ব্রিটেনে স্থায়ী বসবাসের জন্য ‘ইনডেফিনিট লিড টু রিমেইনের আবেদন করতে পারবেন।তবে সে ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ব্রিটেন থেকে যেসব প্রতিষ্ঠান দেশের বাহির থেকে কর্মী আনতে চাইবে তাদেরকে প্রথমে হোম অফিসে লাইসেন্চের জন্য নিবন্ধিত হতে হবে।ব্রিটেন আনুষ্ঠানিক ভাবে ইইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে কর্মী সংকট দেখা দিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে করোনার কারণে যেখানে অর্থনীতি হুমকির মুখে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন, সেখানে নতুন কর্মীদেরকে কাজের সুযোগ করে নেওয়া কতটা সহজ হবে এই নিয়ে শংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।