২০১৮ সালের নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দেশটির হাজারো মানুষ। গতকাল রোববার করাচি শহরে ইমরানের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা ‘যাও ইমরান যাও’ বলে স্লোগান দেন। এর আগে গত শুক্রবার পাকিস্তানের গুজরানওয়ালা শহরে সমাবেশ করে বিরোধীরা।
ইমরান খান ক্ষমতা গ্রহণের পর গত দুই বছরে এটিই বড় কোনো সমাবেশ, যেখানে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। সমাবেশে ইমরান সরকার নিয়েও কড়া সমালোচনা করা হয়।
পকিস্তানের গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে ৯টি বিরোধী দলের সমন্বয়ে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) নামে একটি জোট গঠন করেছেন। দেশটির অর্থনীতিতে বর্তমানে দ্বিগুন মুদ্রাস্ফীতি ও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ইমরান সরকারকে দায়ী করেছে সংগঠনটি। পাশাপাশি গত দুই বছরের শাসনামলে সেন্সরশিপ বৃদ্ধি এবং ভিন্নমত, সমালোচক ও বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে চাপপ্রয়োগের বিষয়টি দৃশ্যমান হয়েছে বলে তারা দাবি করছে।
গতকাল যে সমাবেশ হয়েছে, তাতে প্রতিবাদকারীদের ‘যাও ইমরান যাও’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সমাবেশে নওয়াজ শরীফের মেয়ে ও বিরোধী নেতা মরিয়ম নওয়াজ বলেন, ‘আপনি মানুষের কাছ থেকে চাকরি ছিনিয়ে নিয়েছেন, মানুষের মুখ থেকে দুবেলার খাবার কেড়ে নিয়েছেন। আমাদের দল সামরিক বাহিনীর শত্রু নয় কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যারা বুট দিয়ে জনগণের ভোট নষ্ট করে তাদেরকে সম্মানিত করবেন তাহলে সেটা কখনোই হতে দেওয়া হবে না।’
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজীর ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, ‘আমাদের কৃষকরা বাড়িতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় আছে। যুবসমাজ আপনার প্রতি আশাহত হয়েছেন’।
গুজরানওয়ালা সমাবেশে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বক্তব্য দেন। যেখানে তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরান খানকে সহযোগিতা, ২০১৭ সালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করাসহ বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাক আর্মি। ইমরান খানও নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।