ডেস্ক রিপোর্ট : ময়মনসিংহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ চাকরি দেওয়ার নামে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় । এব্যাপারে ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানায় এজাহার দিয়েছেন ওই ভোক্তভোগী তরুণী ।
জানা গেছে, বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত একজন তরুণী চাকরি আশায় এমপির সুপারিশ পেতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসে গিয়েছিলেন। থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে ওই তরুণী বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসে এমপি তাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য মেশানো ঠান্ডা পানীয় পান করতে দেন এবং তাকে ধর্ষণ করেন। পরে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে এমপি তার প্রতিশ্রুতি পালন না করায় ওই তরুণী বারবার এমপির কাছে গে
লে তাকে হুমকি প্রদান শুরু হয়। এমপি নাজিম উদ্দিন তরুণীকে হুমকি দেয় এই বলে যে, সেদিনের ঘটনা গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। তরুণী বাড়াবাড়ি করলে সেটি প্রকাশ করে দেয়া হবে এবং তার আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ওই তরুণী নিজেও তার নিরাপত্তার জন্য আগে থেকেই মোবাইল ক্যামেরায় রেকডিং চালু রেখেছিলেন। যার ফলে এমপির হুমকি মোকাবেলায় তিনি মোবাইল ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও চিত্র থানায় দাখিল করেন। এ ব্যাপারে গৌরীপুর থানা বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, এমপি কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসে তরুণী ধর্ষণের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশ-বিদেশে ব্যাপক
সমালোচনার জন্ম দেয়। সিলেট ও নোয়াখালীতে গণধর্ষণ ঘটনায় সরকার দলের ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণরোষানল না কাটতেই ময়মনসিংহের এই ঘটনা জনসমক্ষে আসে। কিন্তু দেশের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন খবর প্রকাশিত না হওয়ায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের ঘটনা ভাইরাল হলেই গণমাধ্যমে খবর আসে। আর তা নিয়ে পুলিশ ও সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। কিন্তু ময়মনসিংহে এমপি কর্তৃক ধর্ষিতা তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় সকল পক্ষের নীরবতায় বিষয়টি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে । এমপির এই অপকর্মকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তীর্যক ভাষায় সমালোচনা করেছেন। এরমধ্যে একটি বিবরণ অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সেটি হচ্ছে , ভিডিওটির সঙ্গে উল্লেখ করে দেওয়া লাইন : “মাননীয় স্পিকার আপনাকর সময় ৭ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড। উল্লেখ্য এমপি কর্তৃক এ যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার ভিডিওটি ৭ মিনিট ৫৪ সেকেণ্ডের।
বিশ্লেষক মহলের ধারণা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসে সরকারদলীয় এমপির এ অপকর্ম নিয়ে প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় সর্বত্র এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক- এই লজ্জা রাখি কোথায়? অথবা জাতি এই লজ্জা রাখবে কোথায়? তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসে এই অপকর্ম শুধু মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করেননি বরং সংসদ সদস্য পদবীকেও মারাত্মকভাবে অপমানিত করেছে।