সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যারিস্টার সুমন ও ব্যারিস্টার ইশরাতকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী অন্তর্ভূক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও এক বিচারপতির ছেলে ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন এই দুই আইনজীবী। এই রিটের রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানিকালে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হলো।
আদালত অবমানার রুল জারির পরে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘অনেক আগে হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম, এ কারণে আমার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন।’
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘আমি কবি সুকুমার রায়ের ‘‘বিচার’’ কবিতার কয়েকটি পংক্তি ফেসবুকে লিখেছি। আদালত মনে করেছেন- এটা অবমমাননা হয়েছে, তাই আমার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন।’
এর আগে গত ৮ অক্টোবর জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রুল শুনানিতে হাইকোর্টের এই বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছিলেন রিটকারী আইনজীবীরা। আজ রোববার ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, এই কোর্টে আমরা ন্যায় বিচার পাবো না।’
আইনজীবী অন্তর্ভূক্তির পরীক্ষায় বারবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ২১ নভেম্বর রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেনি হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ গত ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে গত ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তাই রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১(১)(খ) ও ৩০(৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। জুম্মান সিদ্দিকীসহ বার কাউন্সিলের সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
এ রিটের প্রাথামিক শুনানি করে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ওই বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরপর সম্প্রতি বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি হয়। আজ রোববার দুপুরে এই রুলের ওপর আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।