বিজেপি সরকারের পাস করা নতুন কৃষিবিলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন এখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভের সঙ্গে এখন যুক্ত হচ্ছে অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরাও। গতকাল উড়িষ্যার তিন কৃষকের আত্মহত্যার প্রচেষ্টা- এ আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তুলেছে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকরা আগে নিজ নিজ রাজ্যে আন্দোলন করলেও এখন তারা দলে দলে দিল্লি অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেছে। কয়েকদিন বেশকিছু বাধা পেরিয়ে কৃষকদের একটি দল রাজধানীতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া গতকাল হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কয়েক হাজার কৃষক হরিয়ানা রাজ্যের দিল্লির সীমান্তে অপেক্ষা করছে।
এদিকে কৃষক আন্দোলন নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পরস্পরকে দায়ী করছেন। বিজেপিশাসিত হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহার লাল খাট্টার বিক্ষোভের জন্য দায়ী করছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংকে। গতকাল শনিবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহার লাল খাট্টার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাঞ্জাবের কৃষকরা বিক্ষোভ করছে। হরিয়ানার কৃষকরা বাইরে আছে। ধৈর্যধারণ করায় হরিয়ানার কৃষক এবং পুলিশদের ধন্যবাদ জানাই। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী দায়ী এবং তিনিই এ বিক্ষোভে উসকানি দিয়েছেন। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের বেয়ারারা এ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
এর একদিন আগে হরিয়ানা সীমান্তে কৃষকদের বাধা দেওয়ার ঘটনায় মনোহার লাল খাট্টারকে দায়ী করেন কংগ্রেস নেতা অমরিন্দর সিং। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, রাস্তায় পরিখা খুঁড়ে, টিয়ারগ্যাস আর জলকামান ব্যবহার করে কৃষকদের উসকানি দিচ্ছে হরিয়ানা সরকার।
উড়িষ্যায় তিন কৃষকের আত্মহত্যার চেষ্টা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখ-, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ থেকে কৃষকরা ট্রাক্টরে চেপে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছেন এই আন্দোলনে শরিক হতে। উত্তরপ্রদেশ হয়েই তারা দিল্লিতে ঢুকবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে দিল্লি ও এর আশপাশের রাজ্যগুলোর হাজার হাজার কৃষক নয়াদিল্লির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। অমৃতসর থেকে আসা কৃষক হরভজন সিং রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সরকার আমাদের ওপর অত্যাচার করছে। আমরা চাই সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডেকে যাতে এই বিতর্কিত নতুন আইন প্রত্যাহার করা হয়।’
লোকসভার শেষ অধিবেশনে বিতর্কিত কৃষিবিল পাস করে বিজেপি সরকার। বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মুখে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস করানো হয়। তার পর থেকে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিভিত্তিক দুই রাজ্য পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় কৃষক বিক্ষোভ শুরু করে।