চীনের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেকের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশসহ ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্কের মতো দেশ এই ভ্যাকসিনের দিকে মুখিয়ে আছে। তবে এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ঘুষ দিয়ে ভ্যাকসিনের অনুমোদন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সিনোভ্যাক বায়োটেক ২০০৩ সালে প্রথম সার্স ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করে। এরপর ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুর প্রথম ভ্যাকসিনটিও তারা বাজারজাত করে। তবে আদালতের রেকর্ড থেকে জানা যায়, সে সময় এই প্রতিষ্ঠানটির সিইও তাদের ভ্যাকসিন অনুমোদনের জন্য চীনের ড্রাগ নিয়ন্ত্রককে ঘুষ দিয়েছিল।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সিনোভ্যাক তাদের সিইওকে জড়িয়ে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করেছে। পরে চীনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় আইনজীবীদের সহায়তা করায় তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
২০১৬ সালের আদালতের সাক্ষ্য ওয়াশিংটন পোস্ট হাতে পায়। এতে সিনোভ্যাকের প্রধান নির্বাহী ইয়িন ওয়েডং স্বীকার করেন, ২০০২ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা ইয়িন হংঝাং এবং তার স্ত্রীকে ৮৩ হাজার ডলারের বেশি ঘুষ দিয়েছেন। ইয়িন হংঝাং এর বিনিময়ে সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দ্রুতগতিতে করে দেন।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সিনোভ্যাকের করোনা ভ্যাকসিন ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়ার মতো জনবহুল দেশে বাজারজাত হতে যাচ্ছে। তবে এখনো সিনোভ্যাক এই ভ্যাকসিন সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। যার ফলে বিশেষজ্ঞরা এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মেডিকেল এথিক্স বিভাগের পরিচালক আর্থার ক্যাপ্লান বলেন, সিনোভ্যাকের ঘুষ নেওয়ার ইতিহাস রয়েছে, উপরন্তু ভ্যাকসিন সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ না করায় ভ্যাকসিন বিষয়ক সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মহামারি হলেও নৈতিকভাবে যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নৈতিক অস্বচ্ছতার সাক্ষ্য রয়েছে, তাদের ভ্যাকসিন ব্যবহারে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।