তিউনিশিয়ার উপকূলে ভুমধ্যসাগরে একটি অভিবাসী বহন করা নৌকা ডুবে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড পাঁচজন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে। তিউনিসিয়ার একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার ইতালির ল্যাম্পাডুসায় পৌঁছাতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ওই অভিবাসীরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি এবং আল জাজিরা।
দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলী আয়ারি এক বিবৃতিতে জানান, এই অভিবাসীরা সবাই সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের বাসিন্দা। তিউনিসিয়ার বন্দর নগরী সফ্যাক্সের সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় ৬ মাইল দূরে নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকাটিতে প্রায় ৪৫ জন আরোহী ছিলেন। যাদের মধ্যে এখনো ২০ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছেন।
নৌকাটির জরাজীর্ণ অবস্থা ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে যাত্রা করায় সাগরে প্রবল বাতাসের ধাক্কায় ডুবে গিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান আলী আয়ারি।
প্রতি বছর হাজার হাজার অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে তিউনিশিয়া এবং লিবিয়ার মূল পয়েন্ট ব্যবহার করে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে। সংঘাত এবং দারিদ্র্যের কবলে পড়ে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষের ইউরোপ পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পথ হয়ে উঠেছে তিউনিসিয়ার এই সফ্যাক্সের এই উপকূল।
গণ-অভ্যুত্থানে সাবেক স্বৈরশাসক জাইন আলআবিদিন বেন আলী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিউনিসিয়া হয়ে বিভিন্ন দেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের ইউরোপ পাড়ি জমানোর ঘটনা ২০১১ সাল থেকে কমে গিয়েছিল। তবে জাতিসংঘ বলেছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে তিউনিসিয়া হয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে অভিবাসীদের পাড়ি জমানোর ঘটনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে তিউনিসিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ে দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি দেওয়ার সময় ৮ হাজার ৫৮১ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও চলমান করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেও ইতালি তার দক্ষিণ উপকূল দিয়ে প্রতিদিন শত শত অভিবাসীদের প্রবেশ ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।