মো: রেজাউল করিম মৃধা: কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারিতে এক আতংক, হতাশা, দূর্বিসহ যন্ত্রনা এবং অনবরত মৃত্যুর ভয় নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকা। এর মাঝে চলে গেছেন নিজের আপন ছোট বোন, নিকটি আত্বীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব অতিপরিচিত বহু জন। ফেইসবুক সহ যে কোন গনমাধ্যম খুললে মৃত্যুর সংবাদ। আর কত মৃত্যুর সংবাদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে? আর কত?
এ বিশ্বে যত মহামারি, যত দূর্যোগ এসেছে তার মধ্যে কভিড-১৯ বিশ্ব ব্যাপি ছাড়িয়েছে। চীনা ভাইরাস থেকে বিভিন্ন সময় নাম পরিবর্তিত ইন্ডিয়ান ডেল্টা, ক্যান্ট, আফ্রিকান, বর্তমানে ওমিক্রন এক আতংকের নাম। প্রতিদিন বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ওমিক্রন আক্রান্ত রেখেই বিদায় নিচ্ছে ২০২১।
২০১৯ থেকে ২০২১ সালে বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। বুঝিয়ে দিয়েছে একটি ভাইরাস কতটা শক্তিশালী । যার কাছে যে কোন শক্তিশালী দেশও পরাভূত । সব কিছু বন্ধকরে দিয়ে ঘরে বন্ধি থেকে রেহায় পাচ্ছেন না কেউ।
কি ধনী, কি গরীব, সাদা কি কালো, হিন্দু কি মুসলিম বা অন্য ধর্মের । সাগরে ভাসমান কিম্বা আকাশে উড্ডয়মান, স্থলে কিম্বা পাহাড় জংগলে কি ঠান্ডা কি গরমে সব খানেই সর্রব উপস্থিতি করোনাভাইরসের।করোনার কাছে সবাই সমান।
অন্যান্য ভাইরাস , রোগ বা মহামারি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট এলাকায় বা একটি দেশে বা মহাদেশে মহামারি দেখা দিত। কিন্তু কভিন১৯ করোনাভাইরস সারাপৃথিবীতে মহামারি দিয়েছে। কেউ বলছেন এটা মানুষের সৃস্টি আবার কেউ বলছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব।
২০১৯ সালের ১৯শে নভেম্বর প্রথমে চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হলেও পরে ছড়িয়ে পরে সারা বিশ্বে। লক ডাউনের মাধ্যমে এক এক করে বিছিন্ন হয়ে পরে প্রতিটি দেশ।উহানের সেই করোনা কিছুটা সামাল দিতে না দিতেই ব্রিটেন থেকে আরো ৭০ গুন বেশী শংক্রামন শক্তি নিয়ে নতুন করে করোনার আতংক সৃস্টি হয়েছে। ব্রিটেন থেকে পুরো বিশ্ব প্রায় বিছিন্ন তবে কঠিন কঠোর নিয়মের পর যাতায়াত হয় যাত্রীদের।কোভিড ১৯’ উৎপত্তিস্থল- চিনের উহান প্রদেশ। মৃত্যু সংখ্যায় প্রতিদিন যোগ হচ্ছে নতুন মৃত্যুর মিছিল। হয়তোবা সব রেকর্ড ভেজ্ঞে গড়ছে নতুন রেকর্ড ।
আগামীতে কি দিন অপেক্ষা করছে আমরা জানিনা। তবে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। রোগের উপসর্গ লুকিয়ে রাখবেন না। চিকিৎসার সব ব্যবস্থা আজ হাতের মুঠোয়। প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে বাঁচিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করুন।
এপর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ২৮৭ মিলিয়নের ও বেশী মানুষ এবং মৃত্যু বরন করে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন ৫.৪৩ মিলিয়নের ও বেশী মানুষ। তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা। প্রতিদিনই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। ব্রিটেনে করোনায় গত বৃহস্পতিবার আক্রান্ত ১ লাখ ৮৯ হাজার ২১৩ জন এবং মৃত্যু ৩৩২ জন।
ভ্যাকসিনের বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন দিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। ব্রিটেনে বেশীর ভাগ মানুষ ভ্যাকসিনের দুইটি ডোজ নিয়েছেন অনেকে আবার বুস্টার ডোজ ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। আগামী বছর সবার জন্য ভ্যাকসিন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।
ইংল্যান্ডে এখনো কোন কঠিন নিয়ম আরোপ না করলেও যুক্তরাজ্যের বাকী তিন দেশে কঠোর নিয়ম পালন করা হচ্ছে।
এক নজরে দেখে নিন করোনায় বিশ্বের আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা।
USA 54,252,612 16,528 824,339 251
India 34,838,804 2,550 481,080 35
Brazil 22,281,649 10,558 619,249 293
UK 12,748,054 19,074 148,421 222
Russia 10,320,405 7,148 302,671 210
France 9,529,614 14,211 121,012 180
Turkey 9,443,734 11,319 82,198 99
Germany 7,171,423 8,626 111,929 135
Spain 6,294,745 13,371 89,405 190
Iran 6,192,698 7,469 131,572 159
Italy 5,981,428 9,920 137,247 228
Argentina 5,606,745 12,476 117,146 261
Colombia 5,147,039 10,225 129,901 258
Indonesia 4,262,540 1,575 144,088 53
Poland 4,108,215 10,819 97,054 256
Mexico 3,969,686 3,112 299,285 235
Ukraine 3,847,226 8,668 102,088 230
S. Africa 3,446,532 5,886 91,061 156
Netherlands 3,116,039 17,978 20,892 121
Philippines 2,841,260 2,628 51,373
বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ওমিক্রন আক্রান্ত রেখেই, বিদায় নিচ্ছে ২০২১। স্বাগত জানাচ্ছি নববর্ষ ২০২২। আশাকরি আগামী নতুন বছর হবে করোনামুক্ত এক সুন্দর পৃথিবী। ঘরে থাকুন , সুস্থ্য থাকুন, অপরকে সুস্থ্য থাকতে সহযোগিতা করুন। সরকারী বিধিনিষেধ মেনে চলুন।
বারবার হাত পরিস্কার করুন,মুখে মাক্স ব্যাবহার করুন, সম্ভব হলে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে চলুন। বড় অনুস্ঠানে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করবে।আমিন।
সূত্র:- সিএনএন।